ত্রিশের কৌটায় পৌঁছেও থাকুন চির তরুণী!
বয়স বাড়ার সাথে সাথে ওজন বাড়বে, আপনি মোটা হয়ে যাবেন, কাজে কর্মে দেরী হবে, অসুস্থ হবেন বেশী এইসব প্রচলিত কথাগুলো সত্যি নয়।
বিভিন্ন গবেষণায় দেখা গেছে যে যারা নিয়মিত ব্যায়াম করেন এবং স্বাস্থ্যকর জীবন যাপন করেন তারা দেরীতে বুড়ো হন আর বাঁচেনও তদের চেয়ে বেশী যারা খাওয়া-দাওয়া নিয়ে ভাবেন না বা স্বাস্থ্যসচেতন নন।
অনেকেই স্বীকার করবেন যে, আমাদের বয়স যখন ২১-২৯ এর মধ্যে ছিল তখন আমরা শরীর নিয়ে খুব একটা ভাবতাম না। আমরা খেয়ালও করিনি যে, কতো তাড়াতাড়ি আমাদের ক্ষতগুলো শুকিয়ে যেত বা আমাদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা তখন কতোটা শক্ত ছিল।
এই বয়সে এসে এখন দেখি যে সাধারণ ফ্লু বা জ্বর সারতেই আগে যেটুকু সময় লাগতো তার দ্বিগুণ সময় লাগছে। এমনকি এখন আমি আগের চেয়ে বেশী অসুস্থও হচ্ছি। বয়স বাড়ার সাথে সাথেই একদিন আমরা হঠাৎ খেয়াল করি যে আমাদের হাঁটুতে বা পিঠে প্রায় নিয়মিতই ব্যথা হচ্ছে।
এক সময় আপনি যা করতে পারতেন বা যা করে অভ্যস্ত ছিলেন, ত্রিশ পেরুনোর পর সেটুকু করাও অনেক সময় কষ্টকর হতে পারে। বিশেষ করে যদি আপনি মা হন, অথবা আগে খেলতেন, এখন খেলা ছেড়ে দিয়েছেন, তাহলে সচেতন হবার এখনই সময়।
আপনাকে বুঝতে হবে যে আপনার বয়স হচ্ছে, এখন শরীর নিয়ে উদাসীন হলে সেটা আপনার জন্যেই ক্ষতিকর হবে। যোগ ব্যায়াম শেখার সময় আমাদের শেখানো হয়েছিলো যে আমাদের শরীর হলো একটি মন্দিরের মতো আর যোগ ব্যায়ামের প্রতিটি আসন প্রার্থনার সমতুল্য।
আপনার জ্ঞান-বুদ্ধি সবকিছুর বাসস্থান তো আপনার শরীরই, তাই বহু বছর পর্যন্ত সুস্থ থাকতে হলে এর দেখাশোনাও করতে হবে ভালোভাবেই।
বয়স বাড়ার সাথে সাথে ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখার জন্য আপনি নীচের তিনটি কাজ করতে পারেন
• পরিমিত খান আর কি খাবেন সেটা নির্ধারণ করুন খুব ভেবেচিন্তে।
এর মানে বেশী শাকসবজি খাওয়া আর লাল মাংস এড়িয়ে চলা।
ফাস্ট ফুড যেমন বার্গার, ফ্রেঞ্চ ফ্রাই পুরোপুরি বাদ দেওয়া।
এটা খুবই স্বাস্থ্যকর আর এতে ক্ষুধাও কম লাগে।
• সপ্তাহে অন্তত ৪-৫ দিন ব্যায়াম করুন। এটা হতে পারে কার্ডিও যেমন হাঁটা, দৌড়ানো বা সাইকেল চালানো অথবা যোগব্যায়াম। নিয়মিত ব্যায়াম করা আর নিজেকে চ্যালেঞ্জ করে আস্তে আস্তে ব্যায়ামের মাত্রা বাড়ানো আমাদের জন্য খুবই উপকারী।
• নিজের জন্য ক্ষতিকর অভ্যাসগুলো, যেমন ধূমপান, মদ্যপান, গভীর রাত পর্যন্ত জেগে থেকে বেলা করে ঘুমানো বাদ দিতে হবে। বাজে সঙ্গ, নেতিবাচক চিন্তার মানুষজনের সাথে মেলামেশা, আমাদের মনের সাথে সাথে শরীরেরও ক্ষতি করে। এর চেয়ে মনোযোগ দিন ধ্যান অথবা বাচ্চাদের সাথে সময় কাটানোর দিকে।
সবচেয়ে জরুরী হলো এটা বোঝা যে মাসে একবার ব্যায়াম করলেই সাথে সাথে এর ফল দেখতে পাবেন না। প্রাকৃতিক নিয়মে আমাদের বয়স বাড়বেই, এটা আমরা থামাতে পারবো না।
আমরা যা করতে পারি তা হলো আমাদের শরীরটা সুস্থ রাখতে পারি, তাতে শরীরের সাথে সাথে মানসিকভাবেও আমরা তরুণ থাকবো। এ কথা মাথায় রেখেই স্বাস্থ্যকর জীবনযাপনকে অগ্রাধিকার দিয়ে বদলে নিতে হবে নিজের জীবনকে।
প্রতিক্ষণ/এডি/তাজিন